ডিজিটাল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? Digital Marketing কেন শিখবেন?

আপনি কি Digital Marketing শিখতে চান?

ওকে, এটা খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। আপনি যেহুতু ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে ইচ্ছুক তো চলুন এর ব্যাসিক এবং এডভান্স বিষয়গুলো সম্পর্কে আগে জেনে নেওয়া যাক। 

NOTE: আমরা স্টেপ বাই স্টেপ বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করবো🙂

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

যে কোন ডিজিটাল বা ইলেট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পণ্য বা সার্ভিসের প্রচার, প্রচারনা, বিক্রি করার প্রক্রিয়াকে Digital Marketing বলে। 

আমরা অনেকেই মনে করি, ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে শুধু অনলাইন মার্কেটিং  / ইন্টারনেট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কে বোঝায়। কিন্তু না এটা একটা প্রচলিত ভুল ধারণা, ডিজিটাল মার্কেটিং অনলাইন, অফলাইন দুই পদ্ধতিতেই হতে পারে। 

Digital Marketing যেমন ইন্টারনেট ব্যবহার করে হতে পারে, তেমনটি ইন্টারনেটের বাইরেও টিভি, রেডিও, এসএমএস, প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক বিল বোর্ড ইত্যাদি দ্বারা অফলাইনেও হতে পারে। তবে বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট মার্কেটিং জনপ্রিয়তা বেশি এবং ধারণা করা যায় ভবিষ্যতেও এর জনপ্রিয়তা বাড়তেই থাকবে।

NOTE: ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে বিক্রি করাকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলে🙂

Digital Marketing কেন শিখবেন?

রাস্তাঘাটে আমরা বিভিন্ন বিলবোর্ড পোস্টার ইত্যাদি দেখে থাকি, একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন এইসব বিলবোর্ড পোস্টার এমন জায়গাগুলোতেই দেখা যায় যেখানে মানুষজনের ভিড় বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শহরের মেইন মেইন পয়েন্টগুলোতে এইসব বেশি দেখা যায়। ফাকা মাঠে বা ধানের ক্ষেতে কিন্তু এইসব বিলবোর্ড দেখা যায়না। এর  কারণ বিলবোর্ড সেখানেই টাঙ্গানো হয় যেখানে মানুষ জনের ভিড় বেশি যাতে করে সহজেই চোখে পড়ে অর্থাৎ যেখানে অডিয়েন্স সেখানেই মার্কেটিং। 

আমরা একসময় রেডিও তে বিজ্ঞাপন শুনতাম এখন রেডিও এর যুগ প্রায় শেষ তাই সেই রেডিও মার্কেটিং এর ট্রেন্ড ও শেষ হয়ে এসেছে। যদিও এখনো রেডিও তে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় তবে আগের মতো এই মেথর্ডটি অতটাও জনপ্রিয় না।

কয়েক বছর আগেও বিলবোর্ড, নিউজ পেপার,  টিভি মার্কেটিং মেথর্ড  অনেক জনপ্রিয় ছিলো কিন্তু এখন তা অনেক কমে এসেছে এবং ধারণা করা হয় আগামী দিনগুলোতেও কমতে থাকবে। কারণ মানুষ এখন নিউজ পেপার এর বদলে মোবাইল অ্যাপস, ওয়েবে  নিউজ পড়ছে, টিভির বদলে ইন্টারনেটের বিভিন্ন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময় ব্যায় করছে, ব্যাস্তময় এই সময়ে যেন চার দিকে ছুটে চলার দৌড়ে বিলবোর্ডের দিকে তাকানোর সময়টুকু নেই। 

কিন্তু বর্তমানে টাইমপাস করার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট। ২০২১ এর জানুয়ারী  মাসের ডাটা অনুযায়ী বিশ্বের মোট ইন্টারনেট ইউজার ছিলো ৪.৬৬ বিলিয়ন😮

BTRC এর একটি জরিপ অনুযায়ী ২০২১ এর জানুয়ারী মাসের বাংলাদেশের ইন্টারনেট ইউজার ছিলো ১১২.৭১৩ মিলিয়ন যা নিচে দেখতে পাচ্ছেন।

উপরে একটা কথা বলেছিলাম মনে আছে তো? যেখানে অডিয়েন্স সেখানেই মার্কেটিং তো একটু ভেবে দেখেন এত এত অডিয়েন্স ইন্টারনেটে তাহলে মার্কেটিং কি মিস হতে পারে?

অনলাইনে কেনা কাটার হার বাড়ছে, ই-কমার্স মার্কেট দ্রুত গ্রো হচ্ছে, তাই বাধ্য হয়ে প্রতিটা বিজনেস কে ডিজিটালাইজ হতে হচ্ছে। আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস যত ভালোই হোক না কেন, এমনকি পৃথিবীর সেরা প্রোডাক্ট ও যদি আপনি তৈরি করে থাকেন তাঁরপরও কোন ভ্যালু থাকবে না যদি না প্রপার মার্কেটিং হয়। আপনে প্রোডাক্ট তৈরি করলেন অথচ কাস্টমার সেই প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানলোই না তাহলে সেল হবে কোথায় থেকে?

কিছুদিন আগে দ্যা চাইনিজ মোবাইল গডফাদার  একজন সফল উদ্যোক্তার কেস স্টাডি পড়ছিলাম, তাঁর বিজনেস মডেল ১০ টি ভাগে ভাগ করা। প্রথম ধাপ হচ্ছে, একটি ভালোমানের প্রোডাক্ট তৈরি করা, প্রোডাক্টটি যে একদম ইউনিক কিছু হতে হবে তা না কিন্তু ভালো কোয়ালিটির হতে হবে এবং যার চাহিদা বাজারে অধিক সংখ্যক লোকের কাছে থাকতে হবে, এরপর দ্বিতীয় ধাপ থেকে নবম ধাপ পর্যন্ত শুধুই মার্কেটিং মাকেটিং আর মার্কেটিং। কারণ যে বাজারে প্রতিযোগিতা বেশি সে বাজারে ভোক্তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নেই। আর তাঁর দশম ধাপটি হচ্ছে কর্মচারীদের প্রতি সততা এবং উদার মনোভাব প্রদশর্ণ। এই চাইনিজ উদ্যেক্তার প্রোডাক্ট আপনি আমি সহ অনেকেই ব্যবহার করেছি হয়তো, কিন্তু তাঁর বিজনেস মডেল থেকে মার্কেটিং এর গুরুত্ব কতটুকু তা কি বুঝতে পেড়েছি? 

ছোট থেকে বড় সব প্রকার বিজনেসরই মার্কেটিং এর প্রয়োজন আছে, আর মার্কেটিং সেখানেই সম্ভব যেখানে অডিয়ন্স। আমরা ভালো করেই জানি যে অডিয়েন্স এখন ইন্টারনেটে। ২০২০ সালে গ্লোবাল ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভ্যালু ছিলো ৩৫০ বিলিয়ন ডলার যা ধারণা করা যায় ২০২৬ সালে গিয়ে দাড়াবে ৭৮৬.২ বিলিয়ন ডলারে। তো ডিজিটাল মার্কেটিং কেন শিখবেন আশা করি এর মার্কেট ভ্যালু দেখেই বুঝে গেছেন।

NOTE: যেখানে অডিয়েন্স সেখানেই মার্কেটিং🙂

ডিজিটাল মার্কেটিং কাদের শেখা উচিত?

আমি বলবো সবারই শেখা উচিত। মিনিমাম এর ব্যাসিক টা শেখা উচিত, কেননা আপনি যাই করেন না কেন দিনশেষে আপনার মার্কেটিং এর প্রয়োজন হবেই। এবার বলি কাদের Digital Marketing প্রফেশনালি শেখা উচিত?

উদ্যেক্তা

যদি আপনি ব্যবসা করতে চান, বা আগামীতে এন্টারপ্রেনারশিপে যাবেন ভেবে থাকেন তাহলে ব্যবসাতে নামার আগেই মাস্ট ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে ফেলুন। অধিকাংশ স্টারটাপ টিকে থাকতে পারে না, সেলস এর অভাবে আর সেলস তখনি আসবে যখন প্রোডাক্টের প্রপার মার্কেটিং হবে। 

আপনার হাতে হয়তো হিউজ ইনভেস্টমেন্ট আছে, তাই ভাবছেন মার্কেটিং এর জন্য ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করবেন কিন্তু তাঁরপরও আমি বলবো আপনি নিজে মিনিমাম ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাসিক টুকু শিখে রাখুন। কেননা আপনি যে ডিজিটাল মার্কেটার কে চাকরিতে রাখছেন সে আসলেই সঠিক পথে আপনার কোম্পানীকে ড্রাইভ করছে নাকি ভুল ডিরেকশনে আগাচ্ছে আপনি বুঝবেন কিভাবে? যদি না আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা ই না থাকে? তাই নতুন ব্যবসা শুরু করার আগে বা যদি ব্যবসা শুরু করেও থাকেন অবশ্যই Digital Marketing টা শিখে নিন।

চাকরি

বাংলাদেশে জব মার্কেট কেমন তা কারোই অজানা নয়, বেকারত্বের হার দিন দিন ক্রমশই বিদ্ধি পাচ্ছে সবাই ধারাবাধা নিদির্ষ্ট কিছু জবের পেছনে দৌড়াচ্ছে যার কারণে নিদিষ্ট কিছু ফিল্ডে কম্পিটিশন বাড়ছে। অথচ ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই সেক্টরে স্কিলেড ম্যান পাওয়ারের বড়ই অভাব। 

প্রতিটা বিজনেস কে গ্রো করতে হলে বা টিকে থাকতে হলেও সেলস ধরকার, সেলস ছাড়া খুব বেশি দিন মার্কেটে টিকে থাকতে পারবে না আর সেলস তখন হবে যখন মার্কেটিং হবে। যেহুতু মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রি এখন ডিজিটালে মুভ করেছে, তাই সব প্রতিষ্ঠানেই ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করতে হচ্ছে। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং হায়ারিং বাড়ছে, আপনি যদি প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে নিজেকে স্কিলেড করতে পারেন তাহলে চাকরি পাওয়া কোন ব্যাপার না।

সবথেকে মজার ব্যাপার হলো ডিজিটাল মার্কেটারদের স্যালারিও কিন্তু কম হয়ে থাকে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন ডিজিটাল মার্কেটারের স্যালারি মিনিমাম ২৫ হাজার থেকে শুরু হয়ে থাকে তবে এটা দক্ষতা এবং কোম্পানীভেদে নির্ভর করে।

ফ্রিলান্সিং

কিছু মানুষ আছে যারা ৯-৫ টা ধারাবাধা রুটিনে নিজেকে আবদ্ধ করতে চায়না মুক্ত হয়ে থাকছে চায়, আর তাঁদের জন্যই ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার টা হতে পারে বেস্ট অপশন। বর্তমানে  ফ্রিলান্সিং মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে, তাই আপনি যদি একজন দক্ষ Digital Marketer হতে পারেন তাহলে ফ্রিলান্সিং করে অনায়াসে দিন পার করতে পারেন। 

ফ্রিলান্সিং ক্যারিয়ার কেমন তা নিয়ে অন্য আর একদিন লিখবো, তবে এই টুকু জেনে রাখতে পারেন একজন স্কিলেড ডিজিটাল মার্কেটার ফ্রিল্যান্সিং করে আমাদের দেশের একজন সরকারী চাকুরীজিবির হালাল ইনকামের থেকে ৪-৫ গুণ বেশি ইনকাম করতে পারে।

NOTE: ফ্রিলান্সিং,ব্যবসা,চাকরি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে সবকিছুিই হবে শান্তি🙂

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top